ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণে ঝুঁকির বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, যা ঝুঁকির তাৎপর্য বহন করে।
প্রথমত : যেকোনো কোম্পানির সাফল্য তথা সার্বিক উদ্দেশ্য সাধনে ঝুঁকির প্রভাব রয়েছে। পূর্বেই বলা হয়েছে প্রত্যাশার বাইরে কোনো কিছু ঘটার সম্ভাবনাকেই ঝুঁকি বলা হয়। ফলে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনা প্রণয়নের সময়েই ভবিষ্যতের সম্ভাব্য ঘটনাসমূহ বিচার-বিশ্লেষণ করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে অপ্রত্যাশিত ক্ষতি থেকে বাঁচা যায়। উদাহরণস্বরূপ, একটি কোম্পানি শুধু নদীপথে কাঁচামাল আনয়নের সুবিধার কথা চিন্তা করে নদীর ধারে কারখানা স্থাপনা করে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে দু-এক বছর পরে জলোচ্ছ্বাসে, নদীভাঙনের ফলে কারখানাটি নদীতে বিলীন হয়ে গেলে প্রতিষ্ঠানকে বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। ফলে কোম্পানিটির সাফল্য অর্জন সম্ভব হবে না। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি যদি এই সম্ভাবনার কথা আগে থেকেই বিবেচনা করত, তবে হয়তো ঠিক নদীর পাড়েই কারখানা স্থাপন করত না এবং তাতে করে একটি সফল প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিগণিত হতো।
দ্বিতীয়ত : ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের মুনাফা অর্জন নির্ভর করে পণ্যের বাজার চাহিদার উপর। ফলে ব্যবসায় শুরু করার আগেই প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বাজার চাহিদা সম্পর্কিত বিচার-বিশ্লেষণ করে বাস্তবসম্মত চাহিদার অনুমান করে সেই অনুযায়ী ব্যবসায় পরিচালনা ও বাস্তবায়ন করতে হয়। বাজারের প্রকৃত চাহিদা অনুমেয় চাহিদা থেকে কম বা বেশি হতে পারে। কোনো কারণে প্রকৃত বিক্রয় অনুমেয় বিক্রয় থেকে খুব কম হলে পর্যাপ্ত মুনাফা অর্জন সম্ভব হয় না। উদাহরণস্বরূপ বর্ষাকালে অতি বৃষ্টিপাত আশা করে ছাতা প্রস্তুতকারী একটি কোম্পানি অধিক ছাতা প্রস্তুত করে; কিন্তু পরবর্তীতে যদি বর্ষাকালে কম বৃষ্টিপাত হয়, ছাতা প্রস্তুতকারীর ছাতা অবিক্রীত থাকার সম্ভাবনা থাকে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষে প্রয়োজনীয় মুনাফা অর্জন সম্ভব হবে না। এই অবস্থায় ছাতার সাথে যদি অন্য কিছু পণ্যও কোম্পানি তৈরি করত, তবে হয়তো বৃষ্টি কম হলেও সেই পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেত না এবং কারবারটি কাঙ্ক্ষিত মুনাফা অর্জন করতে পারত।
Read more